


রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজ বন্দুক মাথায় ঠেকিয়ে ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যা করেছেন মহসিন (৫৮) নামে এক ব্যবসায়ী। তিনি চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর।বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে ধানমন্ডির ৭ নম্বর রোডের একটি বাড়ির লেভেল-৫ এর একটি ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে।
মাথায় গুলি করার আগে ফেসবুক লাইভে তিনি বার্ধক্যের নিঃসঙ্গতা, পরিবার নিয়ে হতাশার কথা বলেন। এক নিকটাত্মীয়ের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করে দুঃখও প্রকাশ করেন তিনি।এসময় নিজের উপার্জন, সন্তানদের বড় করার কথা তুলে ধরে মহসিন বলেন, ‘প্রকৃত বাবারা না খেয়েও সন্তানদের খাওয়ানোর চেষ্টা করে, ফ্যামিলিকে দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ফ্যামিলি অনেক সময় বুঝতে চায় না। তাই নিজেকে আর মানিয়ে নিতে পারলাম না। যারা দেখছেন তাদের সঙ্গে এটাই আমার শেষ দেখা সবাই ভালো থাকবেন।
এর আগে ছেলে মেয়ের কাছে দুঃখও প্রকাশ করেন মহসিন বলেন, ‘আমার একমাত্র ছেলে। সে অস্ট্রেলিয়া থাকে। আমি আমার বাসায় সম্পূর্ণ একা থাকি। আমার খালা মারা যাওয়ার পর থেকে আমার ভেতরে খুব ভয় করছে। আমি যদি আমার বাসায় মরে পড়ে থাকি আমার মনে হয় না যে এক সপ্তাহেও কেউ জানতে পারবে যে আমি মারা গেছি। আমরা সবকিছুই করি ছেলে-মেয়ে স্ত্রী-পরিবারের জন্য। গত করোনা শুরুর আগ থেকে আমি বাংলাদেশে আছি। একা থাকা যে কি কষ্ট, যারা একা থাকে তারাই এই কষ্ট বুঝে।
ফেসবুক লাইভে তিনি আরও বলেন ‘পৃথিবীতে আপনি আপনার। ছেলে, মেয়ে, স্ত্রী কেউ আপনার না। আজ আপনি আপনার ফ্যামিলিকে যেভাবে মেনটেইন করেন কাল সেভাবে না করলে পরিবারের সঙ্গে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হবে। তারা কেন বুঝে না যে একজন যুবককালে যে আয় করে বয়স হলে তেমন পরিশ্রম করতে পারে না। আয়ও কমে যায়। এসব বিষয় নিয়ে আমি অনেকদিন ধরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। জীবনে প্রতারিত হতে হতে আমি শেষ। আমার বাবা পর্যন্ত আমাকে সম্পদ বুঝিয়ে দেয়নি। যতটুকু করেছি নিজের বলে করেছি। তবে কিছুদিন ধরে জীবনের প্রতি এতোটাই বিতৃষ্ণা এসে গেছে এখন আর বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করছে না।
আমি জানি আমি যদি আত্মহত্যা না করি, এই ঘরে আত্মহত্যা করি, মরে পরেও থাকি তাহলে কেউ জানবেও না। হয়তো অনেকদিন পর জানবে। আমার আত্মীয় যারা দেখছেন তাদের বলতে চাই, আপনারা আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। তিনি বলেন আমি যেটা দিয়ে আত্মহত্যা করছি, সেটির লাইসেন্স আছে এবং এটি নবায়নও করা হয়েছে। এরপর কালেমা পড়তে পড়তে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করেন মহসিন।